কোন ডেটাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অথবা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে অথবা একজনের ডেটা অন্যজনের নিকট বাইনারি পদ্ধতিতে স্থানান্তর করার পদ্ধতি হলাে ডেটা কমিউনিকেশন।
কমিউনিকেশন সিস্টেম হল এমন একটি পদ্ধতি বা পদ্ধতিকে বুঝাতে যেটি একটি বা একাধিক উপকরণের মাধ্যমে তথ্য বা ডাটা সংক্রান্ত তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ করে। কমিউনিকেশন সিস্টেম সাধারণত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, টেলিফোন নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট, রেডিও, টেলিভিশন ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সিস্টেম ইত্যাদি থাকে।
এই সিস্টেমগুলো একটি নির্দিষ্ট প্রোটোকল ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই তথ্য এক বা একাধিক উপকরণের মাধ্যমে অন্যান্য উপকরণের কাছে প্রেরণ করে। সংস্থা, ব্যবসায় ও ব্যক্তিগত উদ্যোক্তা সহ অনেক মানুষ এই সিস্টেমগুলো ব্যবহার করে তথ্য প্রসার করে থাকেন।
ডেটা কমিউনিকেশনে উৎস থেকে ডেটা গন্তব্যে পাঠানোর সময় একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পাঠানো হয়ে থাকে। যে পদ্ধতিতে ডেটা উৎস থেকে গন্তব্যে বা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে তাকে ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড বলে।
উৎস থেকে গন্তব্যে ডেটা দুটি পদ্ধতিতে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে।
১. প্যারালাল ট্রান্সমিশন
২. সিরিয়াল ট্রান্সমিশন
প্যারালাল ট্রান্সমিশন (Parallel Transmission)
যে ট্রান্সমিশনে ডেটার সবগুলো বিট ভিন্ন ভিন্ন লাইন ব্যবহার করে একসাথে সমান্তরালভাবে আদান প্রদান করা হয় তাকে প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে। এই পদ্ধতিতে ডেটা বিট ভিন্ন ভিন্ন লাইনের মধ্যে দিয়ে একই সাথে পাঠানো হয়ে থাকে। প্যারালাল ট্রান্সমিশনে ডেটা সাধারণত ৮ বিট, ১৬ বিট বা ৩২ বিট ইত্যাদি উপায়ে চলাচল করতে পারে।
সিরিয়াল ট্রান্সমিশন (Serial Transmission)
যে ট্রান্সমিশনে একটি মাত্র লাইন ব্যবহার করে ডেটা পর্যায়ক্রমে ১ বিট করে প্রেরক থেকে প্রাপকের দিকে ট্রান্সমিট করা হয়ে থাকে তাকে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে। এই পদ্ধতিতে একসাথে আট বিট ডেটা করে পাঠানো হয়ে থাকে। উৎস থেকে গন্তব্যের দূরত্ব বেশী হলে সধারনত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
Note: সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা ট্রান্সমিশন হওয়ার সময় অবশ্যই দুই কম্পিউটারের মধ্যে এমন একটি সমন্বয় ব্যবস্থা থাকা দরকার যাতে সিগনাল বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে পারে। বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে না পারলে গ্রহীতা কম্পিউটার সেই সিগনাল থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার করতে পারে না। সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনে ডেটা ট্রান্সমিট করার সময় ডেটার বিট গুলোর মধ্যে যে সমন্বয় করা হয় তাকে বিট সিনক্রোনাইজেশন বলে।
বিট সিনক্রোনাইজেশনের উপর ভিত্তি করে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
১. অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission)
২. সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
৩. আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission)
যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটা প্রেরক হতে গ্রাহক কম্পিউটারে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রন্সমিট হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে । অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট করার মধ্যবর্তী বিরতি সময় অসমান হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি ক্যারেক্টার এর ৮ বিটের সাথে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি বা দুটি স্টপ বিট যুক্ত করে প্রতিটি ক্যারেক্টার 10 অথবা 11 বিটের ডেটায় পরিণত করে তারপর ট্রন্সমিট করা হয়। কী-বোর্ড থেকে কম্পিউটারে কিংবা কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে ডেটা পাঠানোর জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
Note: কীবোর্ড হতে কম্পিউটারে, কম্পিউটার হতে প্রিন্টারে, কম্পিউটার হতে কার্ড রিডারে, কম্পিউটার হতে পাঞ্চকার্ড এ অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Synchronous Transmission)
যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটাকে প্রথমে একটি প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করে সংরক্ষণ করে ডেটাকে ব্লক বা প্যাকেট আকারে ভাগ করে প্রতিবারে একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয় তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে। সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ব্লক ট্রান্সমিট করার মধ্যবর্তী বিরতি সময় সব সময় সমান থাকে। প্রতিটি ব্লকের শুরুতে একটি হেডার ইনফরমেশন ও শেষে একটি ট্রেইলার ইনফরমেশন যুক্ত করা হয়। কম্পিউটার হতে কম্পিউটারে, কম্পিউটার বা একাধিক ডিভাইসে একই সাথে ডেটা ট্রান্সমিট করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Isochronous Transmission)
অ্যাসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন এর সমন্বিত রুপ হলো আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন, যাকে আবার সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের উন্নত ভার্সনও বলা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে ডেটা সুষম বিটরেটে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে প্রেরক হতে প্রাপকে অ্যাসিনক্রোনাস পদ্ধতির স্টার্ট ও স্টপ বিটের মাঝে ব্লক আকারে ডেটা স্থানান্তরিত হয়। এখানে দু’টি ব্লকের মধ্যে সময়ের পার্থক্য একেবারে 0 (শূন্য) রাখার চেষ্টা করা হয়। রিয়েলটাইম অ্যাপ্লিকেশন বা মাল্টিমিডিয়া ( অডিও, ভিডিও, ইমেজ ইত্যাদি) ফাইল ট্রন্সমিট করার জন্য আইসোক্রনাস ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।
দুইটি ডিভাইস (মোবাইল ফোন, কম্পিটার ইত্যাদি) এর মধ্যে ডাটা (মেসেজ, ভয়েস কল, ভিডিও কল, ফাইল, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি) স্থানান্তর কে ট্রান্সমিশন মোড বলা হয় ।
এই ডাটা ট্রান্সমিশন মুডগুলিকে কম্পিউটার সায়েন্স মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করেছে
১। সিমপ্লেক্স (Simplex)
২। হাফ ডুপ্লেক্স (Half-Duplex)
৩। ফুল ডুপ্লেক্স (Full-Duplex)
১। সিমপ্লেক্স (Simplex): এটি হল - ট্রান্সমিশন মোডের মধ্যে সবচাইতে খারাপ বা কম জনপ্রিয় পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে Sender শুধু Data পাঠায় আর রিসিভার তা গ্রহন করে। যেমন - কি-বোর্ড (ডাটা রিসিভ করে না শুধু পাঠায়), মনিটর (ডাতা পাঠাতে পারে না শুধু রিসিভ করে)। সহজ একটা উদাহরন হল - রেডিও বা এফ এম রেডিও (একজন মহাজ্ঞানী বলে আর বাকিরা শোনে)। এই ধরনের ডাটা ট্রান্সমিশনে কিন্তু Sender নির্দিষ্ট দিকে ডাটা পাঠায় তাই এইটাকে কেউ কেউ Unidirectional Transmission Mode ও বলে।
২। হাফ-ডুপ্লেক্স (Half-Duplex): এই ধরনের মোডে Sender এবং Receiver উভয় ডাটা পাঠায় এবং রিসিভ করে । তবে এক সাথে না। একজন ডাটা send করে অন্য জন তখন ডাটা রিসিভ করে। ঠিক অপরজন আবার ডাটা Send করে তখন বিপরিত জন ডাটা রিসিভ করে। উদাহরন - Walkie-talkie (পুলিশ মামাদের কাছে দেখা যায় - যেটাকে আমরা ওয়্যারলেস বলে চিনি - একটু ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন - মামারা শুধু তাদের হাই কমান্ড থেকে আসা বার্তা শুনছে, আর যখন কিছু বলতে চায় তখন তারা এই ডিভাইসের পার্শে থাকা বাটনে প্রেস করে বলে। আরেকটা তথ্য দেই - তারা প্রতিটা Sentence এর শেষে Over, Done ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে যেন অপরজন বুঝতে পারে যে, এখন তার বলার সময় হয়েছে) ।
৩। ফুল-ডুপ্লেক্স (Full Duplex): এটি হল ডাটা ট্রান্সমিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোড । এই মোডে বলা যায় ম্যারাথন পদ্ধতিতে ডাটা ট্রান্সমিশন করা যায় । একই সাথে Sender এবং Receiver উভয় পক্ষ্যই ডাটা SEND এবং Receive করতে পারে। যেমন - Telephone বা মোবাইল ফোন। [ভয়েস কল, ভিডিও কল ইমু হোক, হোয়াটস আপ, মেসেঞ্জার যেটাই হোক - আমরা একই সময় উভয়েই কথা বলতে পারি এবং শুন্তেও পারি বিষয় টা সেই রকম]
ডেটা বিতরণ বা ডেলিভারি মোড হল একটি পদ্ধতি যা ব্যবহার করে ডেটা বা তথ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানো হয়। এটি একটি ডেটা ট্রান্সফার পদ্ধতি।
যার মাধ্যমে ডেটা এক স্থান থেকে অন স্থানে বা এক ডিভাইস থেকে অন্য একটি ডিভাইসে ডেটা/তথ্য আদান-প্রদান বা স্থানান্তর হয় তাকেই ডেটা কমিউনিকেশন মিডিয়া/মাধ্যম বলে।
ডেটা কমিউনিকেশন মিডিয়া বা নেটওয়ার্ককে মূলত দুইভাগে ভাগ করে, যথাঃ
এক বা একাধিক ইসুলেশনযুক্ত তারকে নিরবচ্ছিন্ন সাধারণ রক্ষাকারী আবরণের মধ্যে স্থাপন করা হলে তাকে ক্যাবল বলে । উলঙ্গ তারের ক্ষেত্রে কন্ডাক্টরের প্রস্থচ্ছেদ ব্যাস ১/২ ইঞ্চির বেশি হলে তাকে ক্যাবল বলে অভিহিত করা হয়।
Bluetooth
Wi-fi
WiMax
Fiber Optic
তামার তার
কো-এক্সিয়াল ক্যাবল
অপটিক্যাল ফাইবার
ওয়্যারলেস মিডিয়া
অপটিক্যাল ফাইবার হচ্ছে কাঁচ বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি আবদ্ধ একটি মাধ্যম যার মধ্য দিয়ে আলো অনেক দূর পর্যন্ত পরিবহন করা যায় এবং আলোক শক্তির মাধ্যমে ডেটাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত transmit করা যায়। অপটিক্যাল ফাইবারের ভিতর আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন ঘটে।
লেজার (Laser) হলো "Light Amplification by Stimulated Emission of Radiation" এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি উচ্চ শক্তিশালী তরঙ্গবেগ সম্পন্ন তড়িৎ উৎস যা উচ্চ আবেদনসমূহে ব্যবহৃত হয়।
লেজার রশ্মির ব্যবহার
দুই বা ততোধিক ডিভাইসের মধ্যে কোন ফিজিক্যাল কানেকশন কিংবা ক্যাবল সংযোগ ছাড়া ডেটা কমিউনিকেশনের পদ্ধতি হল ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনকে ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে কিংবা ডিভাইসসমূহের মধ্যে দূরত্বের ভিত্তিতে চার ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
যেসকল স্থানে তার বা ক্যাবলভিত্তিক যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয় না। সেসকল স্থানে যোগাযোগের জন্য ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম একটি অপরিহার্য মাধ্যম। আবার প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ পাওয়ার জন্য বিশেষ করে সহজে বহনযোগ্য ডিভাইস যেমনঃ ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন মাধ্যম ব্যবহার করা আবশ্যকীয়।
বর্তমান প্রচলিতমোবাইল ফোন প্রযুক্তিকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়।
যথা- ১) জিএসএম (GSM) ও ২) সিডিএমএ (CDMA)।
জিএসএম (GSM)
GSMএর পূর্ণরূপ (Global System for Mobile Communication) গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন। এই প্রযুক্তিতে একটি সিম যেকোন মোবাইল সেটে ব্যবহার করা যায়। এটি FDMA ও TDMA এর সমন্বয়ে গঠিত একটি সম্মিলিত চ্যানেল আ্যকসেস পদ্ধতি। ইহা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় মোবাইল টেলিফোন প্রযুক্তি। বিশ্বের প্রায় ২১৮ টি দেশ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। বাংলাদেশে গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, টেলিটক, রবি ইত্যাদি সব জিএসএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
সিডিএমএ (CDMA)
(CDMA) এর পূর্ণরূপ (Code Division Multiple Access) কোড ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাকসেস। এই প্রযুক্তিতে একটি নির্দিষ্ট মোবইল সেটের একটি নির্দিষ্ট সিম সংযুক্ত থাকে। ঐ সিম অন্য কোন মোবাইল সেটে ব্যবহার করা যায় না। এই প্রযুক্তিতে প্রতিটি কল বা ডেটা পাঠানো হয় ইউনিক কোডিং পদ্ধতিতে। ইহা একাধিক ব্যবহার কারীকে একইি ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে সিটিসেল সিডিএমএ প্রযুক্তির মোবাইল ফোন।
মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও উন্নয়নের এক একটি পর্যায় বা ধাপকে মোবাইল ফোনের প্রজন্ম বলা হয়।মোবাইল ফোন প্রযুক্তিকে চারটি প্রজন্মে ভাগ করা যায়। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো।
=> প্রথম প্রজন্ম
১৯৭৯ সালে জাপানের NTTC (Nippon Telegraph and Telephone Corporation) প্রথম অটোমেটেড সেলুলার নেটওয়ার্ক চালু করার মাধ্যমে 1G এর সূচনা করে। ১৯৮৩ সালে উত্তর আমেরিকায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথম প্রজন্মের মােবাইল ফোন চালু করা হয় যার নাম ছিল অ্যাডভান্সড মােবাইল ফোন সিস্টেম (AMPS)।
বৈশিষ্ট্য
(১) অ্যানালগ সিগনাল ব্যবহার করে যােগাযােগ স্থাপন করা যায়।
(২) সেল সিগনাল এনকোডিং পদ্ধতি ছিল FDMA।
(৩) কথােপকথন চলা অবস্থায় ব্যবহারকারীর অবস্থানের পরিবর্তন হলে ট্রান্সমিশন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
(৪) সেমিকন্ডাক্টর ও মাইক্রোপ্রসেসর প্রযুক্তির ব্যবহার।
(৫) প্রথম দিকের ফোনগুলো ওজনে বেশি এবং আকারে অনেক বড় ছিলো।
=> দ্বিতীয় প্রজন্ম
১৯৯১ সালে GSM প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে সর্বপ্রথম ইউরােপে দ্বিতীয় প্রজন্মের মােবাইল ফোনের সূচনা হয়। ভয়েসকে Noise মুক্ত করার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রজন্মের মােবাইল ফোনের আবির্ভাব ঘটে যা Digital AMPS বা D-AMPS নামে পরিচিত। এ সময় CDMA (Code Division Multiple Access) নামে নতুন ডিজিটাল পদ্ধতির উদ্ভাবন ঘটে।
বৈশিষ্ট্য
(১) নেটওয়ার্কের রেডিও সিগন্যাল হিসেবে ডিজিটাল সিস্টেম চালু।
(২) নেটওয়ার্ক GSM এবং CDMA পদ্ধতির ব্যবহার।
(৩) এ প্রজন্মে সর্বপ্রথম প্রিপেইড পদ্ধতি চালু হয়।
(৪) সীমিত মাত্রায় আন্তর্জাতিক রােমিং সুবিধা চালু হয়।
(৫) মােবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সার্ভিস চালু হয়।
=> তৃতীয় প্রজন্ম
২০০১ সালে জাপানের টেলিযােগাযােগ কোম্পানি NTT DoCoMo প্রথম অ-বাণিজ্যিক ও পরীক্ষামূলক 3G নেটওয়ার্ক চালু করে। তারও আগে ১৯৯২ সালে তৃতীয় প্রজন্ম মােবাইল ফোনের ধারণা শুরু হয় যা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম ইউনিয়ন (ITU) কর্তৃক 'Internet Mobile Communication for year 2000' নামে নতুন ধারণার উদ্ভব ঘটায়। তৃতীয় প্রজন্মে ডেটা রূপান্তরের কাজে প্যাকেট সুইচিং-এর বদলে সার্কিট সুইচিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ প্রজন্মের মূল উদ্দেশ্য ছিল উচ্চগতিসম্পন্ন ডেটা ট্রান্সমিশন।
বৈশিষ্ট্য
(১) ডেটা রূপান্তরের কাজে প্যাকেট সুইচিং ও সার্কিট সুইচিং উভয় পদ্ধতির ব্যবহার।
(২) উচ্চগতিসম্পন্ন ডেটা ট্রান্সমিশন।
(৩) নেটওয়ার্কে EDGE, GPRS এর অধিক ব্যবহার।
(৪) ডেটা রেট ২ Mbps এর অধিক।
(৫)রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি W-CDMA বা UMTS স্ট্যান্ডার্ড।
(৬) ভিডিও কলের ব্যবহার শুরু ।
(৭) ব্যাপক আন্তর্জাতিক রােমিং সুবিধা।
=> চতুর্থ প্রজন্ম
আগামী দিনের মােবাইল ফোন সিস্টেম হলাে চতুর্থ প্রজন্মের মােবাইল ফোন সিস্টেম। ২০০৯ সালে এ প্রজন্মের মােবাইল ব্যবহার শুরু হয়। এই প্রজন্মের মােবাইল সিস্টেমের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলাে সার্কিট সুইচিং বা প্যাকেট সুইচিংয়ের পরিবর্তে ইন্টারনেট প্রটোকল (IP) ভিত্তিক নেটওয়ার্কের ব্যবহার। ফলে মােবাইল ফোন সিস্টেমে আলট্রা - ব্রড ব্যান্ড গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে।
বৈশিষ্ট্য
(১) মােবাইল ফোন সিস্টেমে আলট্রা-ব্রড ব্যান্ড গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।
( ২) ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড 3G এর চেয়ে ৫০ গুণ বেশি।
(৩) প্রকৃত ডেটা ট্রান্সফার রেট সর্বোচ্চ ২০ Mbps
(৪) এ প্রজন্মে ত্রি-মাত্রিক (3D) ব্যবহারিক প্রয়ােগের ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
(৫) এ প্রজন্মের মোবাইলে স্মার্ট এন্টেনা ব্যবহার করা হয়।
মোবাইল ইন্টারনেট হল ওয়াইফাই, মোবাইল ডাটা সংযোগ বা কেবল মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহার করা। আধুনিক সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ একটি জরুরী অংশ হয়ে উঠেছে এবং এটি অত্যন্ত সুবিধাজনক।
মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে আপনি ইন্টারনেটে সার্চ করতে পারেন, ইমেল সম্পর্কিত কাজ করতে পারেন, সরাসরি ম্যাসেজিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে অ্যাক্সেস করতে পারেন। আপনি ভিডিও স্ট্রীমিং, গেমিং এবং ডাউনলোড করতে পারেন এবং সাথে সাথে আপনার ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ানো যেতে পারে কিন্তু আপনার ডেটা সীমা দেখে নেওয়া উচিত।
মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য আপনার মোবাইল ডিভাইসে ওয়াইফাই, 3G, 4G এবং 5G মোবাইল ডাটা সংযোগের অপশন থাকতে হবে।
ডায়ালিং কোড হল একটি সংখ্যার কোড, যা ব্যবহার করে আপনি ফোনে কোন নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে পারেন। ডায়ালিং কোডগুলি প্রতিনিয়ত দ্বিতীয় পাশে # চিহ্ন দিয়ে লিখা হয়।
তার মাধ্যম ছাড়া যখন প্রেরক ও গ্রাহকযন্ত্রের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করা হয় তখন তাকে তারবিহীন বা ওয়্যারলেস মিডিয়া বলে। এটি সম্ভব হয় কারণ বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের জন্য কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না।
Wireless Fidelity শব্দের সংক্ষিপ্ত রুপ Wi-Fi। (Wi-Fi শব্দটি স্বত্বাধিকারী Wi-Fi Alliance নামীয় একটি সংস্থার নির্ধারিত ট্রেডমার্ক) প্রযুক্তিটি বর্তমান সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় ওয়্যারলেস প্রযুক্তি যেটা উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবহারসহ কম্পিউটারের লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে ডেটা আদান- প্রদান করে থাকে।
যেকোনো মানের Wi-Fi ডিভাইস পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় কাজ করতে পারে। সে কারণে ডেটার নিরাপত্তার খানিকটা ঝুঁকি থাকে। এটি সাধারণত 2.4 থেকে 5 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং এর কভারেজ এরিয়া 50 থেকে 200 মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে এবং ব্যবহার সহজ হওয়ার কারণে একসাথে অনেক ব্যবহারকারী খুব সহজেই এই নেটওয়ার্কে সিগন্যাল জ্যাম তৈরি হতে পারে।
ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং জগতে ব্লুটুথ হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যা স্বল্প দূরত্বের মধ্যে তারবিহীনভাবে দুটি ডিভাইসের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে। ব্লুটুথ নেটওয়ার্কটির ব্যান্ডউইথ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে কম হলেও এটি বহুল ব্যবহৃত। যে সব ডিভাইসে এই পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলোকে ব্লুটুথ ডিভাইস বলে। বর্তমানে ল্যাপটপ, ট্যাব, পিডিএ, স্মার্ট ফোনে ব্লুটুথ প্রযুক্তি আগে থেকে দেওয়া থাকে। এছাড়া ইদানীং মাউস, কীবোর্ড, হেডফোন সেট, স্পীকার ইত্যাদিতেও ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়।
এটি একটি পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক প্যান ( PAN), 2.45 GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং এর ব্যাপ্তি ৩ থেকে ১০ মিটার হয়ে থাকে। হাফ ডুপ্লেক্স মোডে এর ডেটা ট্রান্সমিশন রেট প্রায় 1Mbps ৰা তারচেয়ে বেশি। এটি স্থাপন করা সহজ এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনফিগারেশন করা হয়। ব্লুটুথ নেটওয়ার্ককে পিকোনেটও বলা হয় -এর আওতায় সর্বোচ্চ ৪ (আট) টি যন্ত্রের সাথে সিগন্যাল আদান-প্রদান করতে পারে, এর মধ্যে একটি মাস্টার ডিভাইস এবং বাকিগুলো ব্লেন্ড ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। কতকগুলো পিকোনেট মিলে আবার একটি স্ক্যাটারনেট গঠিত হতে পারে।
WiMAX-এর পূর্ণরূপ হলো World Wide Interoperability for Microwave Access. বহনযোগ্য কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার সুবিধাকে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি বলে।
এটি একটি তারবিহীন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রযুক্তি। এটি IEEE 802.16 স্ট্যান্ডার্ডের ওয়্যারলেস মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক। ২০০১ সালের এপ্রিলে ওয়াইম্যাক্সের জন্ম হয়। বিভিন্ন প্রকার ইন্টারনেট সেবার মধ্যে স্বল্প ব্যয়ে সীমিত আয়তনের এলাকায় ওয়াইম্যাক্স একটি সহজ ও সুবিধাজনক প্রযুক্তি।
ডাটা ট্রান্সমিশন স্পীড বা ব্যান্ডউইথ অথবা ডাটা ট্রান্সফার রেট বলতে বুঝায়, এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে প্রতি সেকেন্ডে ডাটা অাদান প্রদানের হারকে ব্যান্ডউইথ বা ডাটা ট্রান্সমিশন স্পীড বলে।
উদাহরনসরূপ, একটি ডিভাইসের ডাটা ট্রান্সমিশন স্পীড বা ব্যান্ডউইথ ১০ এমবিপিএস বলতে বুঝায় ডিভাইসটি প্রতি সেকেন্ডে ১০ এমবি ডাটা আদান প্রদান করতে পারে।
Read more